বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস-এর আবেদনে এবার সিলমোহর দিল কেন্দ্র। দীর্ঘদিনের ঔপনিবেশিক ছাপ সরিয়ে রাজভবনের নতুন নাম ঠিক হল লোক ভবন। কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদনের পর ইতিমধ্যেই রাজভবনের এক্স হ্যান্ডেলের নাম বদলে দেওয়া হয়েছে লোকভবন। সেই এক্স হ্যান্ডেল থেকেই নতুন নামকরণের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে আরও নিবিড় যোগ তৈরি করতেই এই নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঔপনিবেশিক নাম ছেড়ে এবার মানুষের রাজভবন হিসেবেই পরিচিত হতে চলেছে লোক ভবন।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস শনিবার মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জ থানার জাফরাবাদে মৃত বাবা-ছেলে হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের বাড়িতে যান। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। ওইদিন ঠিক কি হয়েছিল সেই বিষয়ে জানতে চান। এদিকে রাজ্যপালকে সামনে পেয়ে দাস পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি তাদের কথা মন দিয়ে শোনেন এবং বোঝার চেষ্টা করেন। রাজ্যপাল তাদের সান্ত্বনা দেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন। দাস বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাজ্যপাল জাফরাবাদের আরও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর ঘুরে দেখেন। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন বলে আশ্বাস দেন। প্রায় ৪০ মিনিট তিনি জাফরাবাদ গ্রামে ছিলেন। এরপরেই তিনি জাফরাবাদ থেকে বেরিয়ে যান। এদিকে শনিবার রাজ্যপাল সামসেরগঞ্জের জাফরাবাদ আসছেন এই খবর পেতেই সকাল থেকে বেতবোনা গ্রামের বাসিন্দারা রাস্তায় জমায়েত হয়ে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু রাজ্যপাল জাফরাবাদ থেকে বেরিয়ে বেতবোনায় না দাঁড়িয়ে বহরমপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এই ঘটনায় বেতবোনার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাজ্যপালের কনভয়ের নিরাপত্তা রক্ষীদের গাড়ি আটকে তারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। খবর পেয়ে রাজ্যপাল বেতবোনায় ফিরে আসেন এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের অভিযোগের কথা শোনেন। তারপর বহরমপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। রাজ্যপাল বলেন, সামসেরগঞ্জে যা ঘটে গেছে সেটা যেকোন সভ্য সমাজের পক্ষে অত্যন্ত লজ্জাজনক। কিছু দুর্বৃত্ত এটা ঘটিয়েছে। বহু পরিবার ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা আতঙ্কের মধ্যে ছিল। তবে রাজ্য পুলিস ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি এই মুহুর্তে তাদের প্রধান তিনটি দাবি হল- ন্যায়বিচার, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং বিএসএফ ক্যাম্প। একজন রাজ্যপাল হিসেবে রাজ্য ও কেন্দ্রের সমন্বয় করে ওখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও শান্তি ফিরিয়ে আনা আমার দায়িত্ব। বিকেলে বহরমপুর কোর্ট স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন রাজ্যপাল।এদিকে এদিন সকালে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান সহ ছয় সদস্যের দল বেতবোনা, জাফরাবাদে যায়। মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয়া কিশোর রোহতকার বলেন, ওই এলাকার পীড়িতদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সমস্ত ঘটনা তুলে ধরেছেন। সত্যি কয়েকদিন তাদের ভয়ঙ্কর ও বিভীষিকাময় অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর রায় এবং মালদার কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান সামসেরগঞ্জে দাস পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। প্রথমে দাস পরিবারের সদস্যরা কংগ্রেস নেতাদের বাড়িতে ঢুকতে না দিলেও পরে তারা বাড়িতে ঢোকেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সামসেরগঞ্জ ও সূতির ঘটনার পিছনে তৃণমূল ও বিজেপির হাত রয়েছে বলে দাবি করেন। মৃত হরগোবিন্দ দাসের জামাই বিশ্বজিৎ দাস হিংসার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের পাশাপাশি গ্রামে বিএসএফ ক্যাম্পের দাবি জানিয়েছেন।
দুই বিধায়কের শপথ গ্রহণের জট কাটাতে এবার উপরাষ্ট্রপতি তথা প্রাক্তন রাজ্যপালকে ফোন করলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমন বন্দ্যোপাধ্যায়। শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে কিছুতেই কাটছে না জটিলতা। এবার উপনির্বাচনে জয়ী দুই তৃণমূল বিধায়কের শপথ গ্রহণ নিয়ে রাজভবন এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে দড়ি টানাটানি তুমুল পর্যায়ে পৌঁছেছে।একদিকে তৃণমূলের নবনির্বাচিত দুই বিধায়ক চাইছেন বিধানসভায় শপথ নিতে। পাশাপাশি রাজ্যপাল চাইছেন বিধায়করা শপথ নিন রাজভবনে। বিধানসভায় শপথ নিতে চেয়ে তৃণমূলের দুই বিধায়ক রাজভবনে চিঠি দিয়েছেন। তবে সিভি আনন্দ বোসও পাল্টা চিঠিতে তাঁদের জানিয়েছেন বিধায়কদের শপথ গ্রহণ নিয়ে রাজ্যপালই শেষ কথা বলবেন।এদিকে এর মাঝেই আজ উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে ফোন করে দীর্ঘ সময় তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি ধনখড় এর আগে বাংলার রাজ্যপাল পদে আসীন ছিলেন। তিনি রাজ্যপাল থাকার সময় নানা জটিলতা, সংঘাত তৈরি হয়েছিল রাজ্যের সঙ্গে। পরে বিধানসভায় এসে উপনির্বাচনে জয়ী বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করান তিনি। এখন তিনি উপরাষ্ট্রপতি পদে আসীন। তিনি এরাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তিনি যাতে বর্তমান রাজ্যপালকে বিধানসভায় এসে নতুন বিধায়কদের শপথ গ্রহণের অনুরোধ জানান, সেই কারণেই এদিন ধনখড়কে ফোন করেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের মাঝেই রাজ্যপালকে সরাসরি নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, রাজভবনে যা চলছে মেয়েরা শপথ নিতে যেতে ভয় পাচ্ছে। তৃণমূলের নবনির্বাচিত দুই বিধায়ক চাইছেন বিধানসভায় শপথ নিতে। তবে রাজ্যপাল চাইছেন বিধায়করা শপথ নিন রাজভবনেই। বিধানসভায় শপথ নিতে চেয়ে তৃণমূলের দুই বিধায়ক ইতিমধ্যেই রাজভবনে চিঠি পাঠিয়েছেন।তবে সিভি আনন্দ বোসও পাল্টা চিঠিতে তাঁদের জানিয়েছেন, বিধায়কদের শপথ গ্রহণ নিয়ে রাজ্যপালই শেষ কথা বলবেন। বিধানসভা নয়, দুই বিধায়ককে শপথ নিতে হবে রাজভবনেই। তাঁর নির্দেশ অমান্যে বিধায়কদের জরিমানার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যপাল।উল্লেখ্য, এবারের লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে রাজ্যের দুই বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভগবানগোলা এবং বরানগর কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের রেয়াত হোসেন সরকার এবং সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবনির্বাচিত এই দুই বিধায়ককে শপথ নেওয়ার জন্য রাজভবনে যেতে বলেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছিলেন রাজভবনেরই এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী। যা ঘিরে আজ ফের একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশানা করলেন সিভি আনন্দ বোসকে। রাজ্যপালের পদত্যাগ দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে এবার থেকে কোনও কাজে আর রাজভবনে যাবেন না বলেও সাফ জানিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তবে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন হলে কোথায় তিনি যাবেন তাও এদিন স্পষ্ট করেছেন তৃণমূলনেত্রী।মাননীয় রাজ্যপাল! আমার কী দোষ আপনি বলুন। আমি তো জানিই না ঘটনা পুরো। রাজ্যপালের তো পদত্যাগ করা উচিত। মহিলাদের উপর নির্যাতন করার আপনি কে? প্রেসকে ডেকে এডিট করে কিছু ভিডিও দেখিয়েছে। পুরোটা কি দেখিয়েছে? কপিটা আমার কাছে আছে। এখনও তো সব বেরোয়নি। আর একটা পেনড্রাইভ পেয়েছি। আরও কেলেঙ্কারি। বাবারে! আমাকে এখন রাজভবনে ডাকলে আমি আর যাব না। আমাকে রাস্তায় ডাকলে যাব। রাজ্যপালের কথা বলতে হলে আমাকে রাস্তায় ডাকবেন। রাস্তায় গিয়ে কথা বলে আসব। রাজভবনে আর যাব না। যা কীর্তি-কেলেঙ্কারি শুনছি তাতে আপনার পাশে বসাটাও পাপ।উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের আবহে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন অভিযোগ উঠেছে। রাজভবনেরই এক অস্থায়ী কর্মী রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছেন। দুবার রাজভবনের পিস রুমে তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন সিভি আনন্দ বোস, এমনই অভিযোগে হেয়ার স্ট্রিট থানায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছেন ওই মহিলা। যদিও রাজ্যপাল নিজে অবশ্য। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে পাল্টা সোচ্চার হয়েছেন রাজ্যপাল। রাজভবনের তরফে বেশ কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। তবে সেই ভিডিও নিয়েও তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, এডিট করে ওই ভিডিও প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
শনিবার সকালে নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃ ভ্রমণে আসেন বর্ধমান -দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। প্রাতঃ ভ্রমণকালীন স্বমহিমায় প্রাক্তন বঙ্গীয় বিজেপি সভাপতি, দিলেন বর্তমান ইস্যু সম্বন্ধীয় একের পর এক প্রশ্নের উত্তরঃরাজ্যপাল ইস্যুঃতৃণমূল কংগ্রেস এই সমস্ত ব্যাক গ্রাউন্ড তৈরি করেছে। এগুলো তারাই করছে। সবাই জানে এই লোকেরা এই কারণেই ওখানে গেছে। পুরো স্ক্রিপ্ট তৈরি ছিল। তৃণমূল একাই চেঁচাচ্ছে। আর কারুর কোনো টেনশন নেই। কারণ আর সবাই জানে এর পিছনে কে আছে। তৃণমূল এবং সরকারের অপকীর্তির বিরুদ্ধে বললে এটা হয়। ওনার বিরুদ্ধে এখনও কোনো কেস করতে পারেনি ওরা। কালো পতাকা দেখিয়েছে, গো ব্যাক বলেছে। কিছু হয়নি। এখন এটাই শেষ অস্ত্র। তৃণমূল কথায় মহিলা মহিলা বলে। মহিলাদের সম্মান করেনা। তাদের ব্যবহার করে। এখানেও একজন মহিলাকে ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশ তো তদন্ত কমিটি করবেই। আমার বিরুদ্ধে আপনি একটা অভিযোগ করুন। তদন্ত দল তৈরি হয়ে যাবে। বাকি হাজার কোটি লুঠ খুন ধর্ষণ সেখানে কতজন গ্রেফতার হয়েছে? তারা বাড়ি থেকে তৃণমূল নেতাকে জুতোপেটা করে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছে। পুলিশ কি করেছে? পুলিশের কি যোগ্যতা? এবং সরকারের কি ইচ্ছা, সবই আমরা জানি। সম্মানীয় মানুষকে কীভাবে অপমান করতে হয়, তৃণমূল তা দেখিয়ে দিয়েছে। রাষ্ট্রপতি সহ কাউকেই অপমান করতে ছাড়েনি। এমনকি হাইকোর্টের মহিলা বিচারকের স্বামী কে সিআইডি দিয়ে ডেকে পাঠিয়েছে। তৃণমূলের এই নিকৃষ্ট রাজনীতি একদিন তাদের পতনের কারণ হবে।কুনাল ঘোষ ইস্যুঃএসব মক ফাইট। এসব নিয়ে আমরা ভাবছি না। অন্নদাস দের কথার গুরুত্ব নেই। ওই বাড়িতে থাকব, খাবো, লাথি খাবো। ওখানেই থাকব। আবার মুখ খুলব, দুটো একসঙ্গে হতে পারে না। রাস্তায় নামুন। দম থাকলে বেরিয়ে এসে লড়াই করুন। পার্থ চ্যাটার্জি অনেক কিছু বলেছেন কুনাল নিয়ে। এটা ওদের পুরোনো ঝগড়া, বাড়ির ঝগড়া, স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া কেউ রাস্তায় নিয়ে আসে?৭ মে মুর্শিদাবাদে ভোটঃওখানে আইন শৃংখলা বলে কিছু নেই। মুর্শিদাবাদ কে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলাদা করার চেষ্টা চলছে। সমস্ত ক্রিমিনাল এবং অ্যান্টি ন্যাশনাল অ্যাকটিভিটি ওখানে চলছে। তৃণমূল চায় ভোট টা ওদের দিয়ে দিক। বাকি যা খুশি হোক।বিজেপি কর্মীদের ওপর সিউড়িতে হামলাঃনতুন কিছু নয়। ভয় দেখানোর চেষ্টা। এই ভয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেই আজ বিজেপি এই জায়গায় পৌঁছেছে। এবার লাস্ট ধমক চমক চলছে। এরপর কি হবে আমরা ঠিক করব।দুই থানার ওসি বদলঃআরও অনেকে আছে। বর্ধমান জেলায় এরকম দুজন আছে। তাদেরকে আরও বেশ কিছু বছর চাকরি করতে হবে। দিদির আঁচলের তলায় বেশিদিন বসে থাকতে পারবেন না। তারপর খোলা মাঠে আসতে হবে। তখন আমরা হিসেব বুঝে নেব।
বর্ধমানের গন্তারে তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকারকে সমর্থনে জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রী বলেন, বিজেপির অপশাসনে সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে, কেবলমাত্র সাধারণ মানুষের জীবনের মূল্য হ্রাস পেয়েছে। বিজেপি এবং সিপিআইএম একজোট হয়ে আমাদের রাজ্যের ২৬,০০০ মানুষের থেকে চাকরি কেড়ে নিয়েছে। তাই সিপিআইএম-কংগ্রেস-বিজেপির এই জনবিরোধী জোটকে প্রতিহত করতে হবে। নির্বাচন কমিশন আমাদের ১,৫০০ পুলিশ কর্মীকে অন্য রাজ্যে নিয়ে গিয়েছে কিন্তু তাদের পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান থেকে বিরত রেখেছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য কালো দিন। আমি কথা দিচ্ছি, যদি তাঁরা ভোটদান না করতে পারে তাহলে আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো।বৃহস্পতিবার রাজভবনে এক অস্থায়ী মহিলা কর্মীর রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগকে কেন্দ্র করে তোলপাড় হয়ে যায়। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি নারীদের নিয়ে খুব বড় বড় ভাষণ দেন। কিন্তু রাজ্যপালের রাজভবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যাখ্যা কী? সেই অসহায়, নিষ্পাপ মেয়েটির কী দোষ ছিল? লজ্জা লাগছে আমার! ছিঃ! বিজেপির কালো শাসনে আমরা কেউ ভালো নেই, আমাদের সকলকে ভালো থাকতে হবে।যদিও অভিযোগের পর পরই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছেন, সত্যের জয় হবেই। আমি কারও চক্রান্তকে ভয় করি না। কেউ যদি আমার নামে কুৎসা করে নির্বাচনী সুবিধা পেতে চায়, ঈশ্বর তাঁদের মঙ্গল করুন। কিন্তু তাঁরা বাংলায় দুর্নীতি ও সহিংসতার বিরুদ্ধে আমার লড়াই থামাতে পারবে না।
রাজভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসার আগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠলো। রাজভবনের এক অস্থায় মহিলা কর্মী রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ এনেছেন। যদিও রাজভবনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে নির্বাচনে ফায়দা তোলার জন্য এমন অভিযোগ করা হয়েছে।রাজভবন থেকে এক বিবৃতিতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছেন, সত্যের জয় হবেই। আমি কারও চক্রান্তকে ভয় করি না। কেউ যদি আমার নামে কুৎসা করে নির্বাচনী সুবিধা পেতে চায়, ঈশ্বর তাঁদের মঙ্গল করুন। কিন্তু তাঁরা বাংলায় দুর্নীতি ও সহিংসতার বিরুদ্ধে আমার লড়াই থামাতে পারবে না।Truth shall triumph. I refuse to be cowed down by engineered narratives. If anybody wants some election benefits by maligning me, God Bless them. But they cannot stop my fight against corruption and violence in Bengal. Raj Bhavan Kolkata (@BengalGovernor) May 2, 2024এই ঘটনার তৃণমূল কংগ্রেস রেরে করে নেমে পড়েছে। তয়ঁদের বক্তব্য, এই রাজভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থাকবেন। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এত বড় অভিযোগ। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখবে কেন্দ্রীয় সরকার।
সন্দেশখালির পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে তড়িঘড়ি কেরল সফর কাটছাঁট করে রাজ্যে ফিরে এসেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তারপর আজ তড়িঘড়ি সন্দেশখালিতে পৌঁছে যান রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। রাজ্যপাল সন্দেশখালিতে ঢুকতেই তাঁর পথ আটকে রাস্তায় বসে পড়েন হাজরা-হাজার মহিলা। মুখ-মাথা কাপড়ে ঢেকে বাঁচার কাতর আর্তি তাঁরা জানান রাজ্যপালের কাছে। বছরের পর বছর ধরে শেখ শাহজাহান-শিবু হাজরারা তাঁদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে বলে অভিযোগ মহিলাদের। এমনকী পুলিশে অভিযোগ জানালেও কোনও ফল হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। রাজ্যপালকে মৌখিক অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি লিখিতভাবেও অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন এলাকাবাসী।এদিন ধামাখালি থেকে বোটে চেপে সন্দেশখালিতে পৌঁছোন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল এদিন সন্দেশখালি ফেরিঘাটে নেমে থানার রাস্তা ধরে হেঁটে যেতে শুরু করেন। কিছুটা যেতেই রাজ্যপালের পথ আটকে রাস্তায় বসে পড়তে দেখা যায় কাতারে-কাতারে মহিলাকে। প্রায় সবার মুখই ছিল কাপড়ে ঢাকা। শাহজাহান-বাহিনীর ভয়ে তাঁদের পরিচয় গোপন রাখতেই এই কৌশল বলে জানান অনেকে।এদিন রাজ্যপালকে এক মহিলা বলেন, শাহাজাহানদের ভয়ে আমরা মুখ খুলতে পারি না। শিবু হাজরার জন্য এলাকায় টিকতে পারি না। শেখ শাহাজহান এখনও এই এলাকায় ঘুরছে। ওকে গ্রেফতার করা হোক। আমাদের হুমকি দিচ্ছে, পরে আমাদের দেখে নেবে। পুলিশকে বললেও কোনও কাজ হয় না। আমাদের অভিযোগ নেয় না পুলিশ। উল্টে থানা থেকে বলে তোমরা শিবু হাজরার কাছে যাও। আমাদের ভরসা আপনি। আমরা কোনও দলের লোক নয়। আমাদের বাঁচান।আর এক মহিলা রাজ্যপালের হাত ধরে প্রায় কাঁদতে কাঁদতে বলেন, স্যার, শিবু হাজরাকে না ধরলে আমাদের ভয়ঙ্কর অবস্থা হবে। আমরা কারও দিকে মুখ তুলে তাকাতে পারব না। এরা এলাকায় ফিরলে আমাদের বাঁচতে দেবে না। উত্তম, শিবু হাজারাদের ফাঁসি চাই। ওরা দিনের পর দিন অত্যাচার করেছে। সব জেনেও কিছু বলেনি পুলিশ। আপনি আনাদের বাঁচান। ১৩ বছর ধরে এই অত্যাচার সহ্য করছি। সন্দেশখালি থানার ওসিকে আগে সাসপেন্ড করুন। ওদের জন্যই আজ আমাদের এই অবস্থা। আমাদের দুরবস্থার জন্য প্রশাসন দায়ী।এদিন ঠান্ডা মাথায় সন্দেশখালির মহিলাদের সব অভিযোগ শুনেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। আপনারা চিন্তা করবেন না। একদম চিন্তা করবেন না।
সন্দেশখালি থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে বিজেপির বিধায়ক দলকে আটকে দিল কলকাতা পুলিশ। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সেখানে গিয়ে শুনলেন নির্যাতিতদের কথা। এদিকে আগামী কাল সন্দেশখালি যাচ্ছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। এদিকে সন্দেশখালির পরিস্থিতি পৌঁছে গেল জাতীয় রাজনীতিতে। যার বিরুদ্ধে নিন্দায় সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।দিল্লিতে রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তৃণমূলী গুন্ডারা দেখে এসেছে, কাদের বাড়িতে সুন্দরী মেয়ে আছে, কোন মেয়েরা কমবয়সি। তাঁদের স্বামীদের বলা হয়েছে, স্বামী হলেও ওই সব মেয়েদের ওপর তাঁদের কোনও অধিকার নেই। যতক্ষণ তাদের (অপহরণকারীদের) মন না ভরবে, ততক্ষণ ওই মহিলাদের কোনওভাবেই রেহাই নেই। হিন্দু পরিবারের মেয়েদেরকেই ধর্ষণের জন্য বেছে বেছে চিহ্নিত করা হয়েছে। অত্যাচারীরা সবাই তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের লোক। সন্দেশখালির হিন্দু পরিবারের বিবাহিতা মহিলারা এতদিন ধরে এই সব অত্যাচারের কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন। ওই মহিলাদের অভিযোগ, সবকিছু পুলিশের সামনেই ঘটেছে। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তিনি সংবিধান মেনে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবেন। এখন প্রশ্ন করুন শেখ শাহজাহান কোথায়?সাংবাদিক বৈঠক করে ভয়ানক অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট দিতে চলেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সোমবার সরেজমিনে সন্দেশখালি পরিদর্শন করে নির্যাতিতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজ্যপাল।সোমবার রাজ্যপাল সন্দেশখালিতে গিয়ে শুধু সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখেই আসেননি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ শুনে তাঁদের প্রতিকারের আশ্বাস দিয়েছন। পাশাপাশি, তিনি রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্টও তলব করেছেন বলেই দাবি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। সোমবার সন্দেশখালি যাওয়ার আগে রাজ্যপাল বলেছিলেন, শিউরে ওঠার মত ঘটনা। কেরল থেকেই এমন ভয়ংকর ঘটনার কথা শুনেছি। সন্দেশখালিতে গিয়ে তিনি অভিযোগকারিণীদের বলেন, আমার যা করার সব করব। কেউ রেহাই পাবে না।এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি বিধায়কদের বাসকে সন্দেশখালি যেতে দেয়নি পুলিশ। চার ঘণ্টা বাসে আটকে থাকার পর হুংকারের সুরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকার বলেন, তৃণমূলের প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার বলেছে সন্দেশখালি যাবে। ওঁরা বলেছেন, যে এলাকায় ১৪৪ ধারা বলবৎ আছে, তার বাইরে যাবেন। আমরা নজর রাখব। আমাদের আটকানো হচ্ছে। আর, আপনাদের গোরু পাচারকারী মন্ত্রী-বিধায়করা যাবেন? একযাত্রায় পৃথক ফল হয় না। আমরা এটাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরব। ঠিক জায়গায় এর বিচার হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে কাল রাজ্যপাল রিপোর্ট জমা দেবেন। আমরা যা জানিয়েছিলাম, সন্দেশখালির অবস্থা তার চেয়েও ভয়াবহ। ঘুরে দেখার পর এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যপাল।এর আগেই তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়ে দেয়, মঙ্গলবার তৃণমূলের প্রতিনিধিদল সন্দেশখালি যাবে। প্রতিনিধিদলে থাকার কথা মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীরও। এর পাশাপাশি, সরকারের তরফে এরপর পুলিশ আধিকারিকরা সন্দেশখালি থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন। পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, সন্দেশখালিতে এখনও পর্যন্ত চারটি অভিযোগ জমা পড়েছে। সন্দেশখালিতে কোনও ধর্ষণের অভিযোগ নেই। রাজ্য সরকার ১০ সদস্যের টিম গড়েছে। সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে প্রশাসন সজাগ রয়েছে। কোনও অভিযোগ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারের গঠিত টিম সন্দেশখালিতে ঘুরে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলবে। এই পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমের কাছে আন্দোলনকারী গ্রামবাসীরা পালটা অভিযোগ করে বলেছেন, পুলিশ রাতের বেলায় এসে দরজা খুলতে বসছে। দরজায় লাথি মারছে। পুলিশই অত্যাচার চালাচ্ছে। রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আমরা ঘুরে ঘুরে সন্দেশখালির মহিলাদের সঙ্গে কথা বলছি। তাঁদের অভিযোগ জানার চেষ্টা করছি।
ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে শিল্প সম্মেলন নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। পাশাপাশি বিরোধী ইন্ডিয়া জোট নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না প্রাক্তন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি। এদিন কি বলেছেন তিনি?রাজ্যপালকে বাদ দিয়ে বাণিজ্য সম্মেলন:ওনাকে বাদ দিয়ে যদি শিল্প আসে তাহলে ভালো। উনি সবাইকে নিয়ে চলার ডাক দিচ্ছেন। উনি বলেছেন প্রয়োজনে বিরোধীদের সঙ্গে নিতে। এর আগে যে ৭ বার সম্মেলন হয়েছে তার নেট ফল তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না। উনি দুটি কুমির ছানা বারবার দেখান। তাজপুর বন্দর এবং দেউচা পাঁচামি। এখনও টেন্ডার পাল্টানো হচ্ছে। আদানি হাত তুলে নিয়েছে। আর কি কেউ করবে?লোকসভার লক্ষ্যে আজ বৈঠকে তৃণমূল:দলের ভিতরের ব্যাপার। দলে কজন আছে। পার্টি কিভাবে চলবে, এই নিয়েই কথা হবে।অমিত শাহর সভা রুখতে ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য:রাজ্য ভাবছে সভা আটকে বিজেপি কে আটকাবে। এভাবে বিজেপিকে আটকানো যায়না।রাজ্যে নিয়মিত শ্যুট আউট:এ রাজ্যে জীবন ও সম্পত্তির কোনো নিশ্চয়তা নেই। সেখানে শিল্প সম্মলেন করে কি হবে? কে আসবে রাজ্যে? আগে ইমেজ ঠিক করুন।বামেদের ব্রিগেডে রাজ্যের আপত্তি:কে কার জোট? ক্রিকেট ইন্ডিয়া হেরে গেছে। এই ইন্ডিয়া জোটের অবস্থা আরও খারাপ। কেউ সভা করতে চাইলে আটকাতে চেষ্টা করেন ও কোর্টে গিয়ে হেরে যান। এভাবে গণতান্ত্রিক দেশে কাউকে আটকানো যায় না।
২০ মিনিট রাজ্যপাল-অভিষেক বৈঠক। তারপর তুলে নেওয়া হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের ধরনা। মমতার নির্দেশে ধরনা তুলে নেওয়া হয় বলে জানান অভিষেক ল। তবে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে রাজ্যের বকেয়া টাকা না পেলে ফের পথে নামবে তৃণমূল। পাশাপাশি আইনি পথেও হাঁটবে দল, ঘোষণা করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায়। এদিনই আবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের উদ্দেশে তিনটি চোখা চোখা বাক্যবাণ ছুড়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। জোড়-ফুলের বিশ্বাস এতেই চাপে পড়বেন রাজ্যপাল।রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে একটি স্মারকলিপি তুলে দিয়েছে তৃণমূল। সেখানে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে উদ্ভূত সমস্যা এবং তাঁদের দাবি বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে। এই প্রতিনিধি দলে ৭ জন ভুক্তভোগীও ছিলেন। তৃণমূলের দাবি, বাংলার ২১ লক্ষের বেশি মানুষ ১০০ দিনের কাজ করেও তাঁদের হকের টাকা পাননি। সেই অর্থ কেন্দ্রের থেকে আদায়ে তদারকি করুক রাজ্যপাল। এই প্রসঙ্গে তিনটি প্রশ্ন রাজ্যপালের কাছে রেখেছে তৃণমূল।১) এটা কি ঠিক নয় যে, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ১০০ দিনের কাজে বাংলার ২১ লাখের বেশি মানুষ শ্রম ও সময়দান করেও তাঁদের হকের পারিশ্রমিক পাননি? দুবছর পরেও২) সব শর্ত ও নিয়ম মেনেই বাংলার এইসব বঞ্চিত মানুষগলো কাজ করেছেন। কেন তাহলে দুবছরের বেশি সময় ধরে তাঁদের প্রাপ্য আটকে রাখা হল? কেনইবা কেন্দ্রীয় সরকার এঁদের অস্বিত্ব অস্বীকার করছে?৩) ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের ২ নং শিডিউলের ২৯ নম্বর ধারায় সাফ বলা রয়েছে যে, শ্রমিকরা মাস্টার রোল শেষের ১৫দিনের মধ্যে পারিশ্রমিক পাবেন। অন্যথায় ১৬তম দিন থেকেই প্রত্যহ ০.০৫ শতাংশ হারে সুদ যুক্ত হবে। এই অনুসারে পারিশ্রমিক না পাওয়া মানুষগুলো শুধু তাঁদের বিগত ২ বছরের পারিশ্রমিকই নয়, সেই অর্থ সুদ সহ পাওয়ার অধিকারী। তাহলে কী কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার এই গরিব মানুষগুলোকে তাঁদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছেন না?তৃণমূল সূত্রে খবর, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বকেয়া টাকা নিয়ে তিনি পদক্ষেপ করবেন বলে এদিনের বৈঠকে কথা দিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। রাজ্যপালও বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিনি তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের আশ্বাস দিয়েছেন।
শুক্রবার বিকালে বিকাশ ভবনে রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ব বিদ্যালয়ের রেজিস্টারদের নিয়ে বৈঠক করলেন শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিন বিকাশ ভবনে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ১২টা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টাররা। ছিলেন আলিপুরদুয়ার, বাঁকুড়া, কাজী নজরুল, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি ওপেন, মুর্শিদাবাদ, রায়গঞ্জ, যাদবপুর, পঞ্চানন বার্মা, ডায়মন্ড হারবার, কন্যাশ্রী, কল্যাণী ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধিরা।ব্রাত্য বসু বলেন, রেজিস্টারদের সঙ্গে রুটিন বৈঠক করেছি। এর আগেও ভিসিদের বৈঠক সঙ্গে করেছি। ইউনিভার্সিটিতে কি কি সমস্যা আর কিকি প্রয়োজন। আর পড়াশোনা কেমন চলছে? সেই নিয়েই মূলত বৈঠক।রাজ্যপালে ভূমিকা প্রসঙ্গে ব্রাত্য বসু বলেন, উনি ছোট ছোট পুতুল নিয়ে খেলছেন। যারা পুতুল হয়ে থাকতে চান তাদের বলবো একাডেমীর কথা ভাবুন। রাজ্য যে সম্মান দিচ্ছে সেটা ভাবুন। আপনারা কালকে যোগী নন। উচ্চ শিক্ষাকে নষ্ট করে দিয়ে যায় এই খেলায় কেন আপনারা সামিল হবেন। উনি বাংলার শ্রেষ্ঠত্ব ভাঙতে চাইছেন। মমতা ব্যানার্জি যতদিন আছেন এই মেরুদন্ড উনি ভাঙতে পারবেন না।আজ গোয়ালিয়র ঘাটে রাজ্যপালের সঙ্গে যে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যরা ছিলেন তাদের বলব একবার ভেবে দেখুন, আপনারা কিন্তু কালকা যোগী নন। পুতুল নাচের ইতিকথা কবে শেষ হবে জানি না। বলেন শিক্ষামন্ত্রী।রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ করায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। যার বিরোধিতা করেছে রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, উনি বলতে চান উনি নিজে যাঁদের নিয়োগ দিয়েছেন। তাঁরা ধোয়া তুলসী পাতা বাকি সব অসৎ। মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু অর্থনৈতিক অবরোধের কথা বলেছেন , কোনও অধ্যাপকের বেতন বন্ধ হবে বলে জানাননি। সিপিএম এমন হলে হয়তো সন্তোষ দত্তের মত সমস্ত উপাচার্যকে বাড়ি থেকে কাজ করতে হতো কিন্তু আমরা তা করছি না তবে ধৈর্যের একটা সীমা আছে।
ফের নবান্ন রাজভবন সংঘাত চরমে। একদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিষয়ে রাজযপালের একের পর এক সিদ্ধান্ত। অন্যদিকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-মন্ত্রীদের লাগাতার আক্রমণ। আজ, বুধবার ঝাড়গ্রাম থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে বেনজির আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যা। দালাল বলতেও ছাড়লেন না সিভি আনন্দ বোসকে।বুধবার ঝাড়গ্রামে বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করতে থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের বকেয়া অর্থ না পাওয়া, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বাংলাকে টাকা না দেওয়া, আবাস যোজনা নিয়ে এদিন আগাগোড়া মোদী সরকারকে তোপ দাগতে থাকেন তিনি। পাশাপাশি রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালকে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে কোনও উপাচার্য নেই। নেই রেজিস্ট্রারও। কৃতী পড়ুয়ারা সার্টিফিকেট পাচ্ছেন না। এ জন্য আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে দায়ী করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, আমি জানি ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যেটা তরি হয়েছে আমাদের গভর্নর মহাশয়, তিনি এখন কালো চশমা পড়ে- সেটা অবশ্য তিনি পড়তেই পারেন একটার জায়গায় দশটা, জ্ঞান দিয়ে বেরাচ্ছেন। আমরা পাঠালেও করেনা। নিজের ইচ্ছামত কেরালা থেকে লোক এনে ঢুকি দিচ্ছে (উপাচার্য)। কেরালার অনেক বন্ধু আমার এখানে থাকে, তাতে আমার কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু মনে রাখতে হবে ভিসি হতে গেলে ১০ বছর তাঁর প্রফেসর হিসাবে অভিজ্ঞতা থাকা উচিত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একজনকে ভিসি করেছেন যিনি কেরালায় আইপিএস ছিলেন, যাঁর এডুকেশনের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। এখানে ঝাড়গ্রাম ইউনিভার্সিটি করে দিয়েছি। কিন্ত না আছে কোনও উপাচার্য, না আছে কোনও রেজিস্ট্রার। তার কারণ পাঠালেই উনি উনি ওনার মত বিজেপির একটা লোককে বসিয়ে দেবেন। এরপরই মুখ্যসচিবকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ যে, ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচনের জন্য উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে যেন অবিলম্বে তিনটি সুপারিশ করে দেওয়া হয়।মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, আমি সব করে দিচ্ছি, আর উনি (রাজ্যপাল) দালালি করে সব আটকে দিচ্ছেন। আমরা এটা মানবো না। স্ট্রেট মানবো না।এদিন রাজ্যপাল আনন্দ বোসকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যদি আপনার সৎ সাহস থাকে যেটা বিধানসভায় পাস হয়েছে যে মুখ্যমন্ত্রী সব রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হবে তবে সেটা পাস করিয়ে দিন।
অসুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শনিবার ভর্তি করা হল হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, এদিন তাঁর অক্সিজেনের মাত্রা ৭০-এর নীচে নেমে গিয়েছিল। কমে গিয়ছিল পটাশিয়ামের মাত্রাও। এদিন সকাল ১১টা থেকেই তাঁর সমস্যা শুরু হয়। সেই কারণেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। তবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অবস্থা স্থিতিশীল বলেই হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী, ধ্রুব ভট্টাচার্য, সৌতিক পণ্ডা, সুস্মিতা দেবনাথ, আশিস পাত্র, অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায়, সপ্তর্ষি বসু ও সরোজ মণ্ডলের মত পালমোনোলজিস্ট, ক্রিটিক্যাল কেয়ার, মেডিসিন-সহ বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে আট সদস্যের এক মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এই মেডিক্যাল টিমই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে কথা বলেই চিকিৎসা করছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে সি-প্যাপ সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে।তাঁর অসুস্থতার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল শনিবার সংস্কৃত কলেজের অনুষ্ঠানে ছিলেন। সেখানে তিনি খবর পান। তারপর সেখান থেকে সোজা চলে যান হাসপাতালে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার পর রাজ্যপাল জানান, দক্ষ চিকিৎসকরা তাঁর দেখভাল করছেন। আশা করা যায়, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। সিপিএমের তরফে রবীন দেবও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, অক্সিজেনের মাত্রা বর্তমানে স্বাভাবিকের পথে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দিকে। হাসপাতালের তরফে নিয়মিত মেডিক্যাল বুলেটিনে যাবতীয় বিষয়গুলো জানানো হবে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করে টুইট করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। টুইট করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও।দীর্ঘদিন ধরেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অসুস্থ। বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। মাঝে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। শ্বাসকষ্ট, সিওপিডিও এবং বার্ধক্যজনিত সমস্যায় রয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটার পর পরিবারের লোকজন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে খবর দেন। তারপরই হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে এদিন পাম এভিনিউয়ের বাড়ি থেকে বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ ক্রিটিক্যাল কেয়ারের অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে আনা হয় হাসপাতালে। অ্যাম্বুল্যান্সে ছিলেন সপ্তর্ষি বসু-সহ দুজন চিকিৎসকও। এরপর গ্রিন করিডরে অ্যাম্বুল্যান্স চালিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আনা হয় দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে। এদিন বাড়িতে রুটিন চেক আপে ধরা পড়ে মুখ্যমন্ত্রী অক্সিজেনের মাত্রা কমে গিয়েছে। তবে হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যাপারে বরাবর অনীহা রয়েছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের।
পঞ্চায়েত ভোটে মারাত্মক হিংসা র বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তখনও ভর্ৎসনা করেছিলেন কমিশনারকে। রাজীব সিনহার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যপাল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন সরজমিনে ঘুরে পরিস্থিতি যাচাই করেছেন। দিল্লি থেকে কলকাতা ফিরে গণনার দিনও একই রুটিন ছিল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের। তারপরই বাংলার ভোটে রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলে মূল দুটি বিষয়ের বিরুদ্ধে ধর ডাক দিলেন রাজ্যপাল।কী বলেছেন রাজ্যপাল?রাজভবনে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন সিভি আনন্দ বোস। তিনি বলেন, গণতন্ত্রে ভোট হল বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই। ভোটকে কেন্দ্র করে হিংসা বা ঘৃণা তৈরি হওয়া ঠিক নয়। এখন আমাদের ভেদাভেদ ভুলে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। নির্বাচন ব্যালটে লড়া উচিত, বুলেটে নয়। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার নামই গণতন্ত্র। যে পিছিয়ে পড়বে তাকেও হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে। আমরা এসঙ্গে সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাবই। যেমন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র বলেছিলেন, আমরা করব জয় নিশ্চয়।পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলিকে রাজ্যপালের পরামর্শ, রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে বাংলার সমস্ত রাজনৈতিক দলের এই মুহূর্তে ২টি লক্ষ্যে কাজ করা উচিত। প্রথমত, দুটি মূল শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে হবে তাদের। সেগুলি হল হিংসা ও দুর্নীতি। আমরা এই নির্বাচন থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমার বিশ্বাস এর পর হিংসা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ধর্মযুদ্ধ শুরু হবে।ভোটে হিংসার বিরুদ্ধে এদিন সকালে রাজ্যপাল বলেছিলেন, যারা হিংসা ছড়াচ্ছে এবং কন্ট্রোল রুমে বসে যে রাজনীতিকরা রিমোট চালিয়ে এই হিংসায় উস্কানি দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। অল-আউট অ্যাকশন নেওয়া হবে। প্রশাসন কড়া হাতে এই হিংসা প্রতিহত করবে।প্রতিটি সন্ন্যাসীর অতীত রয়েছে, প্রতি পাপীর ভবিষ্যৎ রয়েছে। আজ যারা বাজে কাজ করছেন, ভবিষ্যতে তারাই ভালো কাজ করতে পারেন। আজকের হিংসা ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য নেতিবাচক। তবে আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বাংলাকে নিরাপদ জায়গায় পরিণত করে তুলব।
রাজ্যের বেহাল পরিস্থিতির কথা জানাতে এবার দিল্লি যাচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পঞ্চায়েত নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক হিংসা হয়েছে। তা নিয়ে রাজ্যপালকে প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকরা। জবাবে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছিলেন যে তিনি একজন রাজ্যপালের যা কর্তব্য সেটা করবেন। আর তারপরেই জানা গেল তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। জানা গিয়েছে, দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন রাজ্যপাল। তারফলে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি রাজ্যপাল তাঁর কর্তব্য করতেই দিল্লি যাচ্ছেন? তিনি কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্টে দেবেন? রিপোর্ট দেওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল।এবারের পঞ্চায়েত ভোটের হিংসা রুখতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস গোড়া থেকেই ছিলেন সক্রিয়। বিরোধীদের মুখ থেকে হিংসার আশঙ্কার কথা তিনি শুনেছেন। পাশাপাশি, রাজ্যে পঞ্চায়েতের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই একের পর এক খুনের ঘটনাও খতিয়ে দেখেছেন। বিরোধীদের বিরোধিতা সত্ত্বেও রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন একদিনে করা হয়েছে। তারপরই রাজ্যের নির্বাচন কমিশনারকে তিনি কড়া কথায় সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, রাজীব সিনহাকে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ করে তিনি হতাশ হয়েছেন। নির্বাচন কমিশনার যেন নিরাপত্তার উপযুক্ত ব্যবস্থা করেন, সেই নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েত ভোটের দিন শনিবার রাজ্যপাল নিজে হিংসার খবর পেয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখতে বের হয়েছিলেন। যার তীব্র বিরোধিতা করেছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপাল বলেছিলেন যে, ভোট বুলেটে নয়। ব্যালটে হওয়া উচিত। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত অন্যান্যবারের মত এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনও রক্তাক্ত অবস্থায় শেষ হয়েছে। নির্বাচনে ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ব্যালট বাক্স লুঠ হয়েছে। ভোটকর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও বহু আহত চিকিৎসাধীন। এরপর রবিবার বিকেলে রাজ্যপালের দিল্লি যাওয়ার কথা জানা গিয়েছে।
এর আগে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন সিভি আনন্দ বোস। শুক্রবার খড়গ্রামে নিহত কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ সেখের বাড়িতে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখানে গিয়ে নিহত কংগ্রেস কর্মীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। মনোনয়ন পর্বের প্রথম দিন ৯ জুন নিহত হয়েছিলেন কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ সেখ। অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এদিন রাজ্যপালকে সামনে পেয়ে বিচার চাইল নিহত কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদের পরিবার। তাঁরা রাজ্যপালকে জানালেন নিরাপত্তাহীনতার কথা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ করেন মৃত কংগ্রেস কর্মীর পরিবারের। সিবিআই তদন্তের আর্জি জানান ফুলচাঁদ শেখের স্ত্রী এসমিনা খাতুন।ফুলচাঁদ শেখের দাদা বাণি ইসরাইলের দাবি, হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল। ভোট দিতে গেলে অশান্তি হবে বলে ভয় দেখাচ্ছে। এদিন পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল, দিয়েছেন পাশে থাকার আশ্বাস। শুক্রবার দুপুরে খড়গ্রাম ও নবগ্রামের সফর শেষ করেই মুর্শিদাবাদ জেলার অন্যান্য প্রান্তেও যাবেন।
পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা, হত্যা অব্যাহত। এদিন রাজ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। হিংসা নিয়ে আগেও ন্রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে সতর্ক করেছেন রাজ্যপাল। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। বৃহস্পতিবার ফের সরব হয়েছেন সিভি আনন্দ বোস। কাল বাদ পরশু রাজ্যে ভোট। তার আগে বেনজিরভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার নিন্দার মুখর হলেন বাংলার সাংবিধানিক প্রধান। রাজ্যপাল এদিন নিজের ভাষণে কখনও মহাভারত, কখনও শেক্সপিয়ার, আবার কখনও টিএন সেশন, স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতিচারণ করেছেন।রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, আমি ভেবেছিলাম, বাংলার গ্রামে মঞ্চে গিয়ে দেখব, চিত্ত হেথায় ভয় শূন্য, উচ্চ হেথায় শির। কিন্তু এসে দেখলাম একেবারে উল্টোটা। মানুষের মনে ভয়, মাথা হেঁট হয়ে আছে। গ্রামে গিয়ে বিধবার কান্না শুনেছি, পুত্রহারা মায়ের কান্না দেখেছি। কী করে এসব বন্ধ হবে, যখন রক্তাসুরের হাতেই ক্ষমতা। তবে মনে রাখতে হবে, রক্তাসুর থাকলে মহাকালীও থাকবে। নরক থেকে শয়তান উঠে এসেছে, তারা নৃত্য করছে, ক্যানিং, ভাঙড়, বাসন্তী, কোচবিহার, মুর্শিদাবাদের মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। শয়তানরা এখন সব এখানেই।কমিশনারকে কটাক্ষ, আমি আপনাকে নিয়োগ করেছি, আর আপনি আমাকে হতাশ করেছেন। আপনি কর্তব্য পালনে ফেল করেছেন। রাস্তায় যে শবদেহ পড়ে আছে তার জন্য আপনিই দায়ী। আপনি কি অশ্বথামা হতে চান? রাতের অন্ধকারের চোরের মতো ঢুকে পাণ্ডবদের ছেলেমেয়েকে যে কুচিয়ে কেটেছিল, নাকি আপনি জুজুৎসু হবেন, যিনি অর্ধমকে ছেড়ে এসেছিলেন। ভোটে আধাসামরিক বাহিনীর যথাযথ মোতায়েন, রুট মার্চ, স্ট্রং রুম পাহারা দেওয়ার বিষয়গুলি নিয়ে কমিশনারকে পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যপাল।তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, গোটা রাজ্যে শান্তিপূর্ণ এবং অবাধ নির্বাচন হচ্ছে। সেখানে মাত্র ৭-৮টা বুথের ঘটনা নিয়ে এত প্রলাপের কোনও অর্থ হয় না। রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে রাজনীতি করছেন।
সময় মত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন কথা নয় কাজ হবে এবার। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা প্রসঙ্গে কলকাতা বিমানবন্দরের প্রতিক্রিয়া দিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। কলকাতা বিমানবন্দরে গতকালের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এদিন রাত আটটা নাগাদ দিল্লী থেকে ফিরে তিনি কলকাতা বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনালে আসেন। ডিপারচার লেভেলের থ্রি সি গেটের কাছে যে জায়গায় আগুন লেগেছিল সেই জায়গা তিনি পরিদর্শন করেন। অন্যদিকে গতকালের অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে রাজ্যপাল বিমানবন্দরের অগ্নি নির্বাপন দপ্তরের কর্মীদের প্রশংসা করে বলেন, সঠিক সময়ে সঠিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দ্রুত আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে এবং কোন রকমের বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। কোনও প্রাণহানি হয়নি। একটি নিছক দুর্ঘটনা নয় মানুষের গাফিলতি থাকতে পারে।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সামনে নিজে হাতে ব্যারিকেডের দড়ি খুললেন বিরোধী শুভেন্দু অধিকারী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সামনে বেনজির দৃশ্য দেখা গেল। যেসব প্রার্থী মনোনয়ন জমা করতে পারেননি তাঁদের নিয়ে কমিশনের দফতরের সামনে হাজির হয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার। দলীয় কর্মীদের নিয়ে সেই সময় হাজির ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। এরপরই কলকাতায় কমিশন দফতরেরর সামনে তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয়। কমিশনের দফতরে বিজেপি নেতা-কর্মীরা যাতে ঢুকতে না পারে তার জন্য পুলিশ আগে থেকেই ব্যারিকেড করে রেখেছিল। প্রথমে সেই ব্যারিকেড নিজে হাতে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন শুভেন্দু অধিকারী। পরে ব্যারিকেডের দড়ি খুলে দেন নিজে হাতে।এরপর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে কমিশন দফতরে ঢোকেন কথা বলতে। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এসে ক্ষোভ উগরে দেন বিরোধী দলনেতা। রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোষ্য বলে কটাক্ষ করেন। শুধু তাই নয়, কমিশন তৃণমূলকে সুবিধা করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। ১৪৪ ধারা থাকা সত্ত্বেও রোজ কীভাবে রক্ত ঝরছে? প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু।বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, রাজ্যের শাসকদল, কমিশন এবং পুলিশ মিলে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মনোনয়ন জমা দিতে দিচ্ছে না। ২০ হাজর আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূলকে জিতিয়ে দেওয়াই এদের লক্ষ্য।একটা সময় উত্তেজনা চরমে পৌঁছয়। কমিশনের দফতরের সামনেই জয় শ্রী রাম স্লোগান চলতে থাকে। রাজ্য পুলিশের উদ্দেশে হায় হায় ধ্বনি দেওয়া হয়। শুভেন্দুর দাবি, আদালত স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোর নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু স্পর্শকাতর এলাকা বলে কিছু রয়েছে, তা মানতেই চাইছে না কমিশন। হাইকোর্ট অভিযোগ জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে বললেও, কমিশনে তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই।শুভেন্দুর দাবি, যাঁর মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি, কমিশনের দফতরেই তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা নিতে হবে। আশান্তি রুখতে ও মনোনয়নে অশান্তি থামাতে কমিশন পদক্ষেপ না করলে বৃহস্পতিবার থেকে কমিশন দফতরের সামনে হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমবে বলে হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিনও তাঁর মুখে নো ভোট টু মমতা সুর শোনা যায় নির্বাচন ল কমিশনের দফতরে। মমতাকে ভোট লুঠ না করতে দেওয়াই তাঁর চ্যালেঞ্জ বলে দাবি করেন তিনি।